ঐতিহ্যবাহী বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ ১৯৪৮ সালে সরকারি কলেজ হিসেবে যাত্রা শুরু করে। কলেজটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালক করে আসছে। এই কলেজের বহু ছাত্রী কর্মজীবনে দেশবরেণ্য নেত্রী, বিজ্ঞানী, শিল্পী, সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, প্রকৌশলী ও প্রশাসক হিসেবে সুনাম অর্জন করেছেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান কলেজকে মহিমান্বিত করেছে। |
উল্লেখ্য, জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাও এই কলেজের একজন প্রাক্তন ছাত্রী। | |
ব্রিটিশ শাসনের অবসানের শেষের দিকে পূর্ববঙ্গে তৎকালীন ইডেন ভবনে ১৯৪০ সালে এই কলেজটি ইডেন স্কুল ও কলেজ নামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। দেশ বিভাগের পর ১৯৪৮ সালে এটি সাত নম্বর বকশি বাজারে স্থানান্তরিত হয় এবং ঐ সাল হতেই কলেজটির প্রথম সরকারি কলেজ হিসেবে যাত্রা শুরু। এজন্য কলেজটির প্রতিষ্ঠাকাল ১৯৪৮ ধরা হয়, কিন্তু ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত ইডেন কলেজ হিসেবে কলেজটি পরিচিত ছিল। পরবর্তী সময়ে আজিমপুরের নতুন ভবনে ডিগ্রী শাখা চালু হলে নতুন ভবনটি ইডেন কলেজ নামে এবং বকশি বাজারের সেই স্বনামখ্যাত ইডেন কলেজ প্রথমে গভঃইন্টারমিডিয়েট কলেজ নামে পরিচিতি লাভ করে। ১৯৬৮ সাল থেকে ডিগ্রী কোর্স চালুর পর এর নামকরণ করা হয় ঢাকা সরকারি মহিলা কলেজ। পরবর্তীতে ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশের প্রথম শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বেগম বদরুন্নেসার মৃত্যুর পর তাঁর নামানুসারে কলেজটির নামকরণ করা হয় বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ।নারী সমাজের কল্যাণের জন্য তিনি অনেক গঠনমূলক কাজ করে গেছেন। ১৯৫৩ সালে বেগম বদরুন্নেসা সমাজ সেবামূলক কাজের জন্য রাণী এলিজাবেথ করোনেশন পদক এবং ১৯৯৯ সালে মরণোত্তর স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার লাভ করেন। | |
চারদিকে প্রাচীরঘেরা বদরুন্নেসা কলেজের অভ্যন্তরে নিরিবিলি ও নিরাপদ পরিবেশে এর কার্যক্রম সুষ্টভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে। কলেজটিতে আধুনিক ও যুগোপযোগী শিক্ষাদানের জন্য সমৃদ্ধ লাইব্রেরি, ২টি পাঠাগার, কম্পিউটার ল্যাবরেটরি, অডিটোরিয়াম ও একটি খেলার মাঠ রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে জাতীয় পর্যায়ে গৌরবময় আসন অলংকৃত করায় ২০০২ সালে ঢাকা বিভাগে শ্রেষ্ঠতম কলেজের মর্যাদা লাভ করেছে। | |
বেগম বদরুন্নেছা সরকারি মহিলা কলেজ ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়েছে। | |
বর্তমান অধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবিকুন নাহার এ কলেজের কর্ণধার রুপে দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে অদ্যাবধি ক্লান্তিহীনভাবে কর্মপ্রচেষ্টার মাধ্যমে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে নানা দিক থেকে সাফল্যমন্ডিত করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেনির শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মনোন্নয়নকল্পে একটি নিবিড় পর্যবেক্ষণ কমিটি (নিপক) ও প্রতি শিক্ষাবর্ষে ২টি করে টিউটোরিয়াল পরীক্ষার প্রথা প্রচলিত আছে। এছাড়া কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শায়লা নাসরিন শিক্ষার্থীদের কল্যানে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। ফলে ঢাকা মহানগরের প্রানকেন্দ্রে অবস্থিত নারী শিক্ষায় অনবদ্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের সুখ্যাতি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। |